December 25, 2024, 5:10 am

বিশ্ববাজারে সিমেন্টের কাঁচামালের দাম বেড়ে দ্বিগুণ

অনলাইন ডেস্ক
  • Update Time : Tuesday, March 2, 2021,
  • 270 Time View

দেশীয় বাজারে সিমেন্টের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হতে পারে। কারণ বিশ্ববাজারে সিমেন্টের কাঁচামালের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। কাঁচামালের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন সিমেন্ট উৎপাদকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ক্লিংকার প্রস্তুতে ব্যবহৃত জ্বালানি কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্লিংকারের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। চীন হঠাৎ করে কয়লার আমদানি বৃদ্ধি করায় দাম অব্যাহতভাবে বাড়ছে। উৎপাদন পর্যায়ে আগে যেখানে প্রতি টন কয়লার মূল্য ছিল ৪০ থেকে ৪২ মার্কিন ডলার, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২ ডলারে। সিমেন্টের অন্যতম কাঁচামাল ক্লিংকারের দাম বাড়ছেই। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ক্লিংকারের দাম ৪২ ডলার থেকে বেড়ে ৫৪ ডলার হয়েছে।

অন্যান্য কাঁচামালেও প্রতি টনে ৩ থেকে ৪ ডলার দাম বেড়েছে। এ প্রসঙ্গে সিমেন্ট শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিসিএমএ সভাপতি ও ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস-চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা-পরবর্তীতে পশ্চিমা দেশগুলোতে পুরোদমে অবকাঠামো উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও  এশিয়া অঞ্চলে নির্মাণসামগ্রীর চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ করোনাকালীন নির্মাণসামগ্রী উৎপাদনের মূল কাঁচামাল উৎপাদন কাক্সিক্ষত অনুযায়ী হয়নি। যার ফলে চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে একটি বড় ধরনের ফাঁক তৈরি হয়েছে। এ সুযোগে কোনো কোনো দেশের প্রয়োজনীয় গুরুত্ব বিবেচনায় বেশি দামে নির্মাণসামগ্রীর কাঁচামাল এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উৎপাদিত নির্মাণসামগ্রী ক্রয় করছে। তিনি আরও বলেন, সিমেন্ট এবং স্টিলের মতো অতি প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রীর কাঁচামালের উৎস বাংলাদেশে নেই। তাই শতভাগ বৈদেশিক নির্ভরশীলতার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে উঠানামার ওপরেই এ দেশে নির্মাণসামগ্রীর মূল্য নির্ভরশীল।

তিনি আরও বলেন, চীন এবং ভিয়েতনামেও ব্যাপক উন্নয়নের ফলে নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশে কাঁচামাল আমদানির যে সোর্সিংগুলো রয়েছে সেগুলোও চীন এবং ভিয়েতনামের ক্রয় নিয়ন্ত্রণেই বেশি কাজ করছে। সূত্র বলছে, বাংলাদেশে সিমেন্ট তৈরির যে কয়টি মূল কাঁচামাল রয়েছে তার সবই আমদানিনির্ভর এবং এরমধ্যে ক্লিংকার অন্যতম। করোনা-পরবর্তী সময় অনেক দেশেই আবার নতুন করে উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাপক হারে শুরু হয়েছে। তাই গত কয়েক মাসে নির্মাণসামগ্রীর বিশ্বব্যাপী চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে সিমেন্ট খাতের যে মূল কয়টি কাঁচামাল রয়েছে তার সবকটিই আমদানিনির্ভর। সেে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশীয় বাজারে তৈরি পণ্যের মূল্য পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সক্রিয় সিমেন্ট উৎপাদন কারখানা রয়েছে ৩৫টি। সারা দেশে সিমেন্টের চাহিদা ৩৫ মিলিয়ন টন হলেও কারখানাগুলোর মোট উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে ৮০ মিলিয়ন টন। আগামী তিন বছরে সিমেন্ট উৎপাদন ক্ষমতা আরও ১১ মিলিয়ন টন যুক্ত হবে। দেশে সিমেন্টের বার্ষিক চাহিদা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টন। এ খাতে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। ফলে সরকারি কোষাগার প্রতি বছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্বও পায়। পাশাপাশি সরকার সিমেন্ট কোম্পানিগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ আয়করও পেয়ে থাকে। এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কয়েক লাখ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন।

বিসিএমএ সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া, অসমন্বয়যোগ্য অগ্রিম আয়কর, তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে সিমেন্টের নিম্নমুখী দামের প্রবণতা এবং নদীপথে ও সড়কপথে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রায় সব সিমেন্ট কোম্পানি ক্ষতির সম্মুখীন। খুচরা বাজারমূল্য অনুযায়ী বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের পর থেকে এ পর্যন্ত সিমেন্ট খাতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: রায়তা-হোস্ট
tmnews71